এলডিসি-উত্তরণের সিদ্ধান্তে আবেগী নয়, কৌশলি হতে হবে

Sep 15, 2025

– উন্নয়ন সমন্বয়ের সেমিনারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত

বাংলাদেশ এলডিসি উত্তরণের সময়কাল পিছিয়ে দিতে চাইলে জাতিসংঘ তাতে রাজি হবে- এ কথা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। এটা মানতেই হবে যে, স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার যে শর্তগুলো রয়েছে সেগুলো বাংলাদেশ যথাযথই পূরণ করেছে। তবে এলডিসি উত্তরণ ঘটলে বাংলাদেশের এ যাবতকালের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অর্জনগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে- এই বার্তাটি বিশ্ব সভায় কার্যকরভাবে পৌঁছাতে পারলে কিছুটা সময় পাওয়া যেতে পারে। তাই এলডিসি উত্তরণ বিষয়ে অর্থনৈতিক-কূটনীতির ক্ষেত্রে আবেগী না হয়ে কৌশলি হতে হবে। আজ (বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) ঢাকায় “এলডিসি-পরবর্তি বাংলাদেশ: সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা” শীর্ষক সেমিনারে এমন মতামত রাখেন অর্থনীতিবিদ, শিল্পোদ্যক্তা-সহ অন্যান্য অংশীজনেরা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায় সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কনফারেন্স হলে। সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএস-এর গবেষণা পরিচালক এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি ড. এস. এম. জুলফিকার আলী। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ এবং রিসার্চ এন্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেরপমেন্ট (র‌্যাপিড)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. সৈয়দ নঈমুল ওয়াদুদ, এবং এক্সক্লুসিভ ক্যান লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির।

প্রেক্ষাপট উপস্থাপনায় উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী বলেন যে, এলডিসি-উত্তরণ পেছানো হবে কি-না এই আলোচনার পাশাপাশি গত ৩০-৩৫ বছরে এলডিসি স্ট্যাটাসের সুযোগ বাংলাদেশ কতোটা কাজে লাগাতে পেরেছে বা পারেনি তা খতিয়ে দেখে আগামী দিনের সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি-কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। এলডিসি-উত্তরণের প্রক্রিয়াটি যেন মসৃণ হয় সে জন্য সকল পর্যায়ের অংশীজন একযোগে কাজ করে ১৫৭টি সুনির্দিষ্ট নীতি-প্রস্তাবনা প্রণয়ন করেছেন বলে জানান ফেরদৌস আরা বেগম। সরকার এই প্রস্তাবনাগুলো গ্রহণ করলেও এগুলো বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় বাজেটে কোন সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে ফজলে শামীম এহসান বলেন যে, আমলাতান্ত্রিক গরিমসির জেরে এলডিসি উত্তরণ বিষয়ে সরকার সুনির্দিষ্ট ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে পারছেনা। পাশাপাশি এলডিসি উত্তরণের জন্য বাড়তি সময় পাওয়া গেলে সে সময়ের মধ্যে দেশকে কিভাবে উত্তরণের নজ্য প্রস্তুত করা হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা দরকার। এই রোডম্যাপ তৈরির ক্ষেত্রে দেশের ব্যবসায়িদেরই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে বলে তিনি মনে করেন। বিগত বছরগুলোতে প্রকৃত উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক নীতি না নিয়ে অসাধু ব্যবসায়িদের প্রশ্রয় দেয়ার কারণেই এলডিসি সুবিধা কাজে লাগানো যায়নি বলে মত দেন সৈয়দ নাসির।

প্রধান আলোচক ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন যে,  এলডিসি উত্তরণের জন্য যতোটা বাড়তি সময় পাওয়া যাবে ততোই বাংলাদেশের জন্য লাভ। তবে একই সঙ্গে এলডিসি-পরবর্তি বাস্তবতার জন্য দেশকে প্রস্তুত করার কাজটিও করে যেতে হবে। করোনা মহামারিজনিত অর্থনৈতিক স্থবিরতার কারণ দেখিয়ে ওই সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে এলডিসি-উত্তরণ পাঁচ থেকে দশ বছর পিছিয়ে দেয়া সম্ভব হতো বলে মনে করেন তিনি। তবে ঐ সময়কার নীতি-নির্ধারকরা সে সুযোগটি কাজে লাগাতে চাননি। সভাপতির বক্তব্যে ড. এস. এম. জুলফিকার আলী বলেন যে, এলডিসি উত্তরণ এবং অন্যান্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দরিদ্র-প্রান্তিক মানুষের কাছে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেয়াকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। একই সঙ্গে সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এলডিসি-উত্তরণের সিদ্ধান্তে আবেগী নয়, কৌশলি হতে হবে
এলডিসি-উত্তরণের সিদ্ধান্তে আবেগী নয়, কৌশলি হতে হবে

-উন্নয়ন সমন্বয়ের সেমিনারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত বাংলাদেশ এলডিসি উত্তরণের সময়কাল পিছিয়ে দিতে চাইলে জাতিসংঘ তাতে রাজি হবে- এ কথা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা। এটা মানতেই হবে যে, স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার যে শর্তগুলো রয়েছে সেগুলো...

read more
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ বিষয়ে সংবেদনশীল বাজেট, তবে কিছু ক্ষেত্রে জন-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ বিষয়ে সংবেদনশীল বাজেট, তবে কিছু ক্ষেত্রে জন-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়নি

-উন্নয়ন সমন্বয়ের বাজেট প্রতিক্রিয়া আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে একদিকে সামষ্টিক-অর্থনৈতিক বাস্তবতার প্রতি যথাযথ সংবেদনশীলতা দেখানো হয়েছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক-অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো বিষয়েও বাজেট-প্রণেতাদের সচেতন থাকতে হয়েছে।...

read more
ধূমপান কমাতে সিগারেট কার্যকর করারোপ করার এখনই সময়
ধূমপান কমাতে সিগারেট কার্যকর করারোপ করার এখনই সময়

- উন্নয়ন সমন্বয়ের সেমিনারে আলোচকবৃন্দ সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়ে তার ওপর কার্যকর হারে করারোপই এই ক্ষতিকারক পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হিসেবে প্রমাণিত। তবে বাংলাদেশে সিগারেটে কার্যকর করারোপ না হওয়ায় এখনও...

read more