– প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবের হোসেন চৌধুরি, এমপি
সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালীকরণের যে খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে তা বর্তমানে চুড়ান্তকরণের অপেক্ষায় আছে। উল্লেখ্য যে, খসড়ায় ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বাতিল, সিঙ্গেল স্টিক সিগারেট/বিড়ি ও ই-সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ, বিক্রয় স্থলে তামাক পণ্যের প্রদর্শনী ও তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ, এবং তামাক পণ্যের প্যাকেটে সচিত্র সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধির প্রস্তাবনা রয়েছে।
জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই প্রস্তাবনাগুলোকে সংশোধিত ধূমপান ও তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনটি অধিকতর জনবান্ধব ও শক্তিশালী করে সংসদে দ্রুত উত্থাপন এবং বর্তমান সরকারের মেয়াদে পাশ করা একান্ত জরুরি।
এই প্রেক্ষাপটে আজ সোমবার (২৮ আগস্ট ২০২৩ তারিখে) উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে “সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাশের লক্ষ্যে” বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত আলোচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত এবং আলোচনা সভার প্রধান অতিথি সাবের হোসেন চৌধুরি বলেন, “এই সংসদের শেষের দিকের অধিবেশনের অগ্রাধিকার তালিকায় এই আইনটি নিয়ে আসতে হবে। যার জন্য নাগরিক ফোরামের আলোচনাগুলোই পারে এই জনগুরুত্বপূর্ণ আইনটিকে সংসদে পাশের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে।”
উক্ত আলোচনায় সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. সাদেকা হালিম, অধ্যাপক এবং সভাপতি, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সভাপতি, বিএফইউজে, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গ্লোবাল টেলিভিশন এবং মোস্তাফিজুর রহমান, লিড পলিসি এডভাইজর, সিটিএফকে এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ড্রাস্টিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) । উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেছেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আতিউর বলেন যে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীটি পাশ হলে সেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের সাথে বহুলাংশে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। যা আগামী প্রজন্মের নাগরিকদের তামাক ব্যবহারের সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমবে। তাই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ভিশন বাস্তবায়নে সংশোধিত আইনটি বর্তমান সরকারের মেয়াদেই পাশ করা জরুরি। তামাক কোম্পানিগুলোর সিএসআর বন্ধ করা আশু প্রয়োজন এবং এই সরকারের মেয়াদেই এই আইন পাশ করা সম্ভব বলে মনে করেন অধ্যাপক সাদেকা হালিম। মোস্তাফিজুর রহমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনীটি মন্ত্রিপরিষদ থেকে অনুমোদনের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন যে, এই প্রস্তাবনা কার্যকর করা গেলে কিশোর-তরুণদের তামাকের বিষয়ে আগ্রহী হওয়ার সম্ভাবনা বহুলাংশে কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে। গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল মনে করেন, তামাকের বিরুদ্ধে শক্ত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হলে এই আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশ করা প্রয়োজন।
উক্ত সভায় তামাক-বিরোধী অ্যাক্টিভিস্ট/সংগঠন, শিক্ষক ও গবেষকগণ, অর্থনীতিবিদগণ, স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত বিশিষ্ট নাগরিকগণ ও গণমাধ্যমের কর্মীগণ জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ বিষয়ে নিজ নিজ মতামত ব্যক্ত করেছেন। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন শাহীন উল আলম, হেড অব প্রোগ্রামস, উন্নয়ন সমন্বয়।